শ্বাসকষ্টে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পরিসংখ্যান বিভাগের এক ছাত্রী মারা গেছেন। অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালের চিকিৎসকদের গাফিলতির। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। ওই ছাত্রীর নাম নাঈম নির্মা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেইট এলাকার একটি বাসার দুই তলায় থাকতেন ওই ছাত্রী। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বাসার অন্য দুইজনের সহযোগিতায় নাঈমাকে চবি মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে অক্সিজেন দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক সান্তনু মজুমদার। তবে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এক নম্বর গেইট এলাকায় গেলে সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। পরে হাটহাজারী থেকে একটি সিলিন্ডার কিনে পুনরায় চমেক হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন তারা। সেখানে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা চবি মেডিক্যালে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় মেডিক্যালের উন্নয়নে ১০ দফা দাবি পেশ করেন তারা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন, ওষুধ সরবরাহ ও অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা বৃদ্ধি, সাইকিয়াট্রিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নাঈমা নির্মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাঈমার অ্যাজমার সমস্যা ছিলো। শুক্রবার এ সমস্যা গুরুতর হলে তাকে চবি মেডিক্যালে নেওয়া হয়। এ সময় তাঁর জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিলো। তবে চবি মেডিক্যালের গাফিলতি কারণে অক্সিজেন দিতে দেরি হয়।
চবি মেডিক্যালের চিকিৎসক সান্তনু মজুমদার বলেন, যে দুইজন ওই ছাত্রীকে নিয়ে এসেছিলো তারা বাসার মধ্যে অজ্ঞানই পেয়েছিলো। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ও কোনো রেস্পন্স পায়নি বলে জানিয়েছে। নিয়ে আসার পর করিডর থেকে চেক করে ভেতরে নিয়ে প্রেশারসহ সবকিছু চেক করে কোনো রেস্পন্স পাইনি। তবুও মেডিক্যাল চেকাপের জন্য পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, ওনার সঙ্গে যারা ছিলো আমি ইনডিরেক্টলি তাদের বলেছি ওনার আব্বা-আম্মাকে খবর দিতে। কারণ, ইসিজি বা নিশ্চিত না হয়ে সরাসরি কিছু বলা যায় না। আমরা তাকে ১০ লিটারের হাই ফ্লো সিলিন্ডারটাই দিয়েছিলাম। এটা ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট চলার কথা।
চবি মেডিক্যালের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, প্রশাসন থেকে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। চিকিৎসকের যদি কোনো গাফিলতি থাকে, অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।