সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
Homeজাতীয়মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ
spot_img

মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ

নিউজ ডেস্ক

আজ শনিবার রাত ১২টার পর থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ হচ্ছে। অর্থাৎ ১২ অক্টোবর রাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় এ নিষেধাজ্ঞা চলবে।

ইলিশ সংরক্ষণে প্রজনন মৌসুমে এ সময়কালে সারা দেশেই বন্ধ থাকছে ইলিশ শিকার, বাজারজাতসহ সব কার্যক্রম। এদিকে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, নৌপুলিশসহ সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাপক প্রস্তুতিও রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের এই ২২ দিনে মাদারীপুর জেলার শিবচরের পদ্মানদীর বিভিন্ন পয়েন্টে গোপনে ইলিশ শিকার করে অসাধু জেলেরা। পদ্মার পাড়েই অস্থায়ী হাট বসিয়ে দেদারসে বিক্রি হয় সেই ইলিশ। এই সময়ে অবাধে বিপণনে বাধা থাকায় কিছুটা কম দামে ইলিশ বিক্রি হয়ে থাকে। শিবচরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ মানুষ মাছ কিনতে পদ্মার পাড়ে ছুটে আসে। বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, শিবচরের পদ্মানদীর চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ী, বন্দরখোলা ইউনিয়নের নদীর পাড়ে মাছ বিক্রির অস্থায়ী হাট বসানো হয়েছে। খুব ভোর এবং বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ায় বরফ দিয়ে নদীর চরে মাটি খনন করেও ইলিশ সংরক্ষণ করে অসাধু চক্রটি।

আরেকটি সূত্র জানায়, মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর হয়ে চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেরা নদীতে নামতে পারবেন না। এ সময়ে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এ বছর জেলেরা যাতে নদীতে নামতে না পারে সেই লক্ষ্যে জেলা-উপজেলা মৎস্য অফিস, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানা গেছে। পদ্মার পাড়ে কোনো অস্থায়ী হাট বসলে দ্রুত তা ভেঙে দেওয়াসহ কঠোর ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।

শিবচর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে জেলে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে মতবিনিময় সভা, প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত ছিল। শিবচরের যে সব জেলেরা মাছ ধরে তাদের তালিকা তৈরি করে বিনামূল্যে খাদ্যপণ্য দেওয়া হচ্ছে। অসাধু জেলেরা যাতে পদ্মায় নামতে না পারে সেই লক্ষ্যে বিশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, র‌্যাব এবং সেনাবাহিনীর বিশেষ তৎপরতা থাকবে এবার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদ্মাপাড়ের একাধিক জেলে জানান, ইলিশ ধরা বন্ধের এই সময়ে মৌসুমি জেলেদের আগমন ঘটে। এরাই নিষিদ্ধ মৌসুমে ইলিশ ধরে। এছাড়া পয়সাওয়ালা অনেকেই নৌকা, জাল কিনে দেয় মাছ ধরতে। আমরা যারা প্রকৃত জেলে, তাদের বেশির ভাগই নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরি না।

শিবচরের চরজানাজাত নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. হাবিবুল্লাহ জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণে আমরা এবার বদ্ধপরিকর! আমাদের টিম সার্বক্ষণিক নদীতে নজরদারি রাখবে। আমরা পদ্মানদীর একাধিক পয়েন্ট চিহ্নিত করে অভিযান চালাবো। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষসহ সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের আরও সচেতন হতে হবে, সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র আরও জানায়, শিবচরের পদ্মানদীর যে-সব স্থানে নিষিদ্ধ মৌসুমে ধরা ইলিশ বিক্রি করা হয়, সেখানে যাতে অস্থায়ী কোনো হাট-বাজার বসতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলেরা যাতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইলিশ ধরতে যেতে না পারে সেজন্য নদীতে একাধিক টিমের অভিযান থাকবে। একই সঙ্গে শিবচর, চাঁদপুর, শরিয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ, সদরপুরে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করার পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে। এদিকে ইলিশ যাতে সংরক্ষণ করতে না পারে সেজন্য শিবচরের সব বরফকল ২২ দিন বন্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এদিকে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য অফিস, উপজেলা প্রশাসন ও নৌপুলিশের একাধিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় আমরা সবাই একযোগে কাজ করবো। জেলেসহ সংশ্লিষ্টদের সচেতন করতে সভা-সেমিনার হয়েছে। এবার নদীতে কঠোর নজরদারি রাখা হবে।

চাঁদপুরের নদীকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু কাউছার দিদার বলেন, বিগত বছরের মতো এবারও ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। ইলিশকে ডিম ছাড়তে দিতে ১২ অক্টোবর রাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা চলবে।

spot_img
এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

আরও সংবাদ

spot_img